
কবিতা ও ছড়া
ছড়া
নোভার আঁকা
-ওয়াহিদ ওয়াসেক
নোভা, কী এঁকেছ দেখি?
ওমা এ কী!
গাছ এঁকেছ মাছ এঁকেছ
কী এঁকো এই ফের?
আঁকব এখন দেশের ছবি
এবং মুজিবের!
সাবাশ সাবাশ নোভা—
তোমার আঁকা ছড়িয়ে পড়ুক
সবখানে পাক শোভা!
কবিতা
স্বপ্নের মিছিলে যাই সত্যের মিছিলে
-বাছিত ইবনে হাবীব
স্বপ্নের মিছিলে যাই, রুয়ে আসি কিছু সদ্য সবুজ
কিশোলয়। আশা করি মহিরুহ হবে কাল –
পরিক্রমায়।
দেখবো সত্য- সুন্দরের নিখুঁত বিজয়।
দেখতে চাই না এক হাতে আনন্দের বাঁশি।
আরেক চোখে বেদনার মিছিল। এক হাতে
তরতাজা গোলাপের তোড়া।আরেক হাতে
ধারালো ক্ষুধার্ত তরবারী।
আশার আলো দিয়ে মুছে যাই কষ্টের কালিমা
রেখা।কখন দেখবো এ দেশে সাধারণ মানুষের হাসিমুখ।বক্ষগুলো স্ফীত হবে পোতপোত
পতাকার মতো।
স্বপ্নের মিছিলে যাই নিরাপদ ঠিকানার খোঁজে
সত্যের মিছিলে যাই রোদমাখা প্রত্যয়
বাঁচিয়ে রাখবো বলে।
-শাহজালাল উপশহর
সিলেট।
স্বাধীনতা (সনেট)
-রানা সরকার
স্বাধীনতা এসেছে লক্ষ ত্যাগের ফলে,
রক্তের সাগর দিয়ে তরী আসে কূলে।
স্বাধীন হতে ঝরেছে বহু তাজা প্রাণ,
গেছে কত মা-বোনের ইজ্জত সম্মান।
কত মা রয়েছে সন্তানের পথ চেয়ে,
মায়ের বুকে হয়নি ফেরা মুক্ত হয়ে।
মেহেদি ছিল কত নব বধূর হাতে,
দেশ মুক্ত হয় তাঁদের স্বামীর রক্তে।
দীর্ঘ ছিল যে, নয় মাসের কালো রাত,
শোণিতের বিনিময়ে এসেছে প্রভাত।
স্বাধীনতার জন্য যাঁরা দিয়েছে প্রাণ,
তাঁরা হলো এই জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান।
আবাল-বৃদ্ধ-বনিতায় হয় স্বাধীন,
বেঁচে থাকবে তাঁরা হৃদয়ের গহীন।
-লালবাগ, ঢাকা।
দাগ
-ফেরারি মুসাফির
আমাকে রক্তজবার রক্তিমা চেনাতে এসো না,
আমি দেখেছি একাত্তরের জমীন
ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইল শ্যামলিমায়
ছোপ ছোপ রক্তের হোলি- দাগ!
আমাকে কৃষ্ণচূড়ার লাল রং দেখাতে এসো না,
আমি দেখেছি আমার ভাইয়ের বুক
সবুজের চাদরে আকা বাংলার-
স্বপ্ন- অভিলাষ মাখা মুখ; মানচিত্র!
আমাকে লালপদ্ম কী জানাতে এসো না,
আমি শুনেছি হাজারো মায়ের গল্প
বুলেটের আঘাত থেকেও বিক্ষত যারা
হায়েনার নখড়ে- আচড়ে, আঘাতে।
সেই সব দিনরাত্রির ত্যাগ ভোগে
বিষাক্ত দেহে বিরাজিত নীলপদ্ম হৃদয়
তথাপি বঞ্চনার অভিশাপ বয়ে ফেরা জাতির হাতে
লাল সবুজের পতাকাই আজ-
সুখ- শান্তনার শেষ ভরসা।
আমার সোনার বাংলা
-আহমদ আল মনজুর
জাতীয় ভাষা বাংলা মোদের
জাতীয় ফুল শাপলা
জাতীয় সংগীত হলো ভাই
আমার সোনার বাংলা।
জাতীয় পাখি দোয়েল মামা
জাতীয় ফল কাঠাল
জাতীয় বিমানবন্দর হলো
হযরত শাহজালাল।
জাতীয় বন সুন্দর বন
জাতীয় বৃক্ষ আম
জাতীয় মসজিদ হলো ভাই
বায়তুল মুকাররাম।
শেরে বাংলা নগর হলো
জাতীয় গ্রন্থাগার
দেশের জাতীয় পতাকা যে
লাল সবুজের আকার।
জাতীয় খেলা কাবাডি ভাই
গ্রামে দেখা যায়
বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম আছে
জাতীয় মাঠের পাতায়।
জাতীয় কবি বিদ্রোহী যে
কাজী নজরুল ইসলাম
বিশ্ব মাঝে উঁচু হোক
বাংলাদেশের নাম।
স্বাধীনতা
-মাসুদার রহমান মাসুদ
স্বাধীনতা, তুমি যে সবার
হৃদয়ের গহিনের ভালোবাসা,
তোমাকে পেয়ে নিত্য সবার
ভরে যাচ্ছে মনের অপূর্ণ বাসা ৷
সারাটি কাল তোমারি সাথে
থাকিতে চাই মোরা সুখেতে মেতে,
ভেঙ্গো না তুমি আশা কিছুতে
তুমি যে সবার উত্তম বসতে ৷
তুমি যে সবার হৃদয়ে-তে
মিশে আছো রুধি রক্তের মতনে,
তাইতো তোমারি বাস-গৃহে
থাকিতে চাই মোরা সারাটি ক্ষণে ৷
তোমারি বিপদে সর্ব জনে
থাকে-যে চিন্তিত হয়ে সর্বদায়ে,
তোমারে হারালে প্রাণপাখি
যাবে-যে মোদের মৃত্যুর আলয়ে ৷
তোমারি নগণ্য অপমানে
জেগে উঠবো মোরা বিদ্রোহী বেশে,
তোমারি শত্রুদের পতনে
দিব্য করিবো মোরা এক নিমেষে ৷
(ছন্দ অক্ষরবৃত্ত, মাত্রা পর্ব ১০+১২)
বিজয় ডিসেম্বর
-এ. এম. মহিউদ্দিন সরকার
বাংলাদেশে পাক শাসনের আসন যেদিন টলে
সেদিনটাকে আজকে সবাই বিজয় দিবস বলে
লাল সবুজের স্মৃতি ঘেড়া নিশান আমার উড়ে
কিনে ছিলাম রক্ত দিয়ে বিজয় ডিসেম্বরে
বিজয় কিন্তু অনেক দামী সহজলভ্য নয়
মুক্তি সেনা বিজয় আনে জয় করে সব ভয়
মাগো তুমি হায়েনা ভয়ে কাদঁছো দেখে তাই
তোমার ছেলে ঘর ছেড়েছে তোমায় দিতে ঠাঁই
তাই লাল সবুজের পতাকাটার আজকে খুটি শক্ত
আনতে সেটা বীর সেনারা দিয়ে ছিলো রক্ত
আর হবে না শোষণ এবার তোমার আপন ঘরে
রক্ত দিয়ে কেনা এই বিজয় ডিসেম্বরে
লেখক: ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি, ঢাকা কলেজ
বিজয় নিশান
-দিপক দাস
বিজয় মানে মুক্তির নিশান,
অত্যাচারের শেষ অবসান।
বিজয় মানে মুক্তির জয়,
বাংলার আকাশে সূর্যোদয়।
বিজয় মানে স্বাধীনতা,
বন্ধ হলো বর্বরতা।
বিজয় মানে লাখো প্রাণের অর্জন,
বাংলা মায়ের দুর্বার গর্জন।
বিজয় মানে প্রাণের উল্লাস,
বিজয় মানে মুক্ত বিলাস।
বিজয় মানে সুভাষিত নগর,
বিজয় মানে গ্রামখানি ঢাকা-
জুঁই-শাপলায় আর টগর।
বিজয় মানে ফুলে ফলে অবাদ স্বাধীনতা,
চিরতরে বন্ধ হলো পাকিদের বর্বরতা।
বিজয় মানে বিজয় নিশান,
সকল বৈষম্যের অবসান।